একসময় যেটা ছিল কল্পনা আর সায়েন্স ফিকশনের দৃশ্য, সেটাই আজ বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। আকাশে চলা গাড়ি বা Flying Carএখন আর ভবিষ্যতের গল্প নয়। চীনের গুয়াংঝোউ শহর আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেছে দেশের প্রথম বৃহৎ আকারের Flying Carফ্যাক্টরি, যা বছরে ১০,০০০ ইউনিট উৎপাদনে সক্ষম। এই ঘটনাকে শুধু প্রযুক্তিগত সাফল্য নয়, বরং একটি নতুন অর্থনৈতিক যুগের সূচনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গুয়াংঝোউয়ে শুরু হলো বিশ্বের নতুন গতি: ফ্লাইং কারের গণ-উৎপাদন
গুয়াংঝোউ শহর দীর্ঘদিন ধরেই লো অ্যালটিটিউড ইকোনমি বা নিম্ন-আকাশ অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এবার সেই যাত্রায় যুক্ত হলো আরও একটি মাইলফলক চীনের প্রথম গণ উৎপাদনের Flying Car কারখানার উদ্বোধন।
এই ফ্যাক্টরি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো চীনে ফ্লাইং কার ছোট পরিসরের পরীক্ষামূলক উৎপাদন থেকে বেরিয়ে এসে স্কেলড ম্যানুফ্যাকচারিং বা পূর্ণমাত্রার উৎপাদনে প্রবেশ করল।
বছরে ১০,০০০ ফ্লাইং কার তৈরির ক্ষমতা মিনিটে একটি বিমান প্রস্তুত!
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় সব যাচাই, পরীক্ষণ এবং বিমানযোগ্যতা (airworthiness) সনদ সম্পন্ন হলে এই কারখানা নিয়মিত উৎপাদন শুরু করবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী
-
বছরে ১০,০০০ Flying Car উৎপাদন করা সম্ভব
-
পূর্ণ উৎপাদনে প্রতি ৩০ মিনিটে একটি ফ্লাইং গাড়ি সম্পন্ন হবে
-
এটি বিশ্বের প্রথম ফ্লাইং কার কারখানা যা এমন উৎপাদন ক্ষমতা রাখে
এমন তথ্য শুধু প্রযুক্তির উন্নয়নই নয়, বরং ভবিষ্যতের পরিবহন ব্যবস্থার দিকেও স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় যেখানে আকাশপথ হবে দৈনন্দিন যাত্রার আরেকটি বিকল্প।
XPENG AEROHT: প্রথম Land Aircraft Carrier গড়েছে নতুন ইতিহাস
গুয়াংঝোউয়ের হুয়াংপু জেলায় ইতিমধ্যেই XPENG AEROHT তাদের ফ্লাইং ভেহিকল যাত্রা শুরু করেছে। সম্প্রতি তারা তাদের প্রথম Land Aircraft Carrier মডেলটি রোল আউট করেছে যা বিশ্বের প্রথম গণ-উৎপাদিত ফ্লাইং কারের লাইন-অফ-প্রোডাকশন সম্পন্ন হওয়ার নির্দেশ দেয়।
এই Flying SUV ধারণাটি স্থলপথে চলার পাশাপাশি আকাশে ভেসে ওঠার প্রযুক্তির সংমিশ্রণ। ভবিষ্যতের পরিবহন যে নতুন মাত্রা পেতে যাচ্ছে, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ এটি।
EHang: বিশ্বের প্রথম স্বয়ংক্রিয় যাত্রীবাহী eVTOL-এর তিনটি গ্লোবাল সার্টিফিকেশন
এদিকে চীনের আরেক উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠান EHang ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী একাধিক প্রথম অর্জন করেছে। তাদের স্বয়ংক্রিয় যাত্রীবাহী বিমান EH216-S পেয়েছে
-
বিশ্বের প্রথম eVTOL Type Certificate
-
বিশ্বের প্রথম Production Certificate
-
বিশ্বের প্রথম Standard Airworthiness Certificate
সবচেয়ে বড় কথা, এই বিমানটি সম্প্রতি গুয়াংঝোউ ডেভেলপমেন্ট জোনে তাদের প্রথম বাণিজ্যিক ডেমো ফ্লাইট সম্পন্ন করেছে।
এটি প্রমাণ করে যে ভবিষ্যতের স্বয়ংক্রিয় উড়ন্ত যান শুধু ফ্যান্টাসি নয় বরং এখন বাস্তবের মাটিতেই দাঁড়িয়ে আছে।
চীনের Flying Car বিপ্লব: বিশ্ব পরিবহনে নতুন অধ্যায়
গুয়াংঝোউয়ে প্রথম বৃহৎ ফ্লাইং কার ফ্যাক্টরির উদ্বোধন চীনকে এ ক্ষেত্রে বিশ্বসেরা অবস্থানে নিয়ে গেল।
এটি প্রমাণ করে:
-
চীন ভবিষ্যতের পরিবহন প্রযুক্তিতে অন্যান্য দেশের থেকে অনেক এগিয়ে
-
নিম্ন-আকাশ অর্থনীতি হবে নতুন যুগের বিশাল বাজার
-
ফ্লাইং কার সহজলভ্য হলে শহরে যানজট, দূষণ এবং সময়ের অপচয় কমবে
-
বাণিজ্যিক, জরুরি পরিবহন, পর্যটন, মেডিকেল রেসকিউ সব ক্ষেত্রেই বিপ্লব আসবে
আজকের এই শুরু আগামী দিনের বৈশ্বিক পরিবহন ব্যবস্থাকে নতুন রূপ দেবে যেখানে স্থলপথের পাশাপাশি আকাশপথও হবে আমাদের দৈনন্দিন যাত্রার স্বাভাবিক অংশ।
ডিসক্লেইমার এই লেখার তথ্য বিভিন্ন প্রকাশিত রিপোর্ট, সরকারি বিবৃতি ও প্রযুক্তিগত আপডেটের ভিত্তিতে প্রস্তুত। অফিসিয়াল ঘোষণা বা পরবর্তী আপডেটে পরিবর্তন আসতে পারে। পাঠকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সর্বশেষ তথ্য যাচাই করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।